মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, পেকুয়া :::
মাষ্টার মো. নুর মোহাম্মদ। সরকারী স্কুলের শিক্ষক তিনি। পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের পেঠান মাতবর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছে। এ শিক্ষক কখনো লুঙ্গি পরিধান করে কখনো বা প্যান্ট পরে তার বিদ্যালয়ের শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নেন। লুঙ্গি পরিধান করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানও করান এ ‘গুনধর’ শিক্ষক! সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য সরকারী ড্রেসকোড থাকলেও এ শিক্ষকের এ নিয়ে কোন ধরনের মাথা ব্যথা নাই। নিজের খেয়াল খুশিমত (ইচ্ছেমতো) সরকারী স্কুলে চাকুরী করছেন। সরকারী ড্রেসকোড না মানলেও মাস শেষে নির্ধারিত বেতন ভাতাও সরকারী কোষাগার থেকে উত্তোলন করছেন ওই শিক্ষক! বিদ্যালয়টি দূর্গম এলাকায় হওয়ার সুবাধে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বা সংশ্লিষ্টদের নজরে আসেনি।
আজ ২১ ফেব্রেুয়ারী মহান ভাষা দিবস। পেকুয়া উপজেলার সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহে সরকারী আদেশে প্রভাত ও ভাষা শহীদদের স্মরণে র্যালী অনুষ্টিত হয়েছে। এর মধ্যে শিলখালী ইউনিয়নের পেঠান মাতবর পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাষ্টার নুর মোহাম্মদ আজ ২১ ফেব্রেুয়ারী সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভাষা শহীদদের স্মরণে র্যালী শুরুরে পূর্বে বিদ্যালয়ের কচিকাচা শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করান। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে শিক্ষক নুর মোহাম্মদ শিক্ষার্থীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর মাঝখানেই লুঙ্গি পরিধান করে হাটছেন। এ দৃশ্য দেখে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদু ছমদ তার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনের ক্যামেরা অন করে লুঙ্গি পরিহিত শিক্ষক নুর আহমদের ছবি তুলেন। এরপর তিনি নিজেই তার ফেসবুক একাউন্টে এ নিয়ে স্টাটাস লিখে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
এ প্রসঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদু ছমদ জানান, আজ ২১ ফেব্রেুয়ারী মহান ভাষা দিবসের র্যালী শুরু পূর্বে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের মাঠে সারিবদ্ধভাবে ধাঁড় করিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝখানে লুঙ্গি পরিধান হাটেন ওই শিক্ষক। তিনি জানান, কচিকাচা শিক্ষার্থীরা এসব শিক্ষকদের কাছ থেকে কি শিখবে? লুঙ্গি পরিধান করে প্রায় সময় ওই শিক্ষক শ্রেনী কার্যক্রমেও অংশ নেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি লুঙ্গি পরিধানের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন‘ ২১ ফেব্রেুয়ারী তার ডায়রিয়া রোগ হয়েছে। তাই তিনি লুঙ্গি পরে বিদ্যালয়ে এসেছেন। অসুস্থ হলে কোন চিকিৎসকের কাছে বা সরকারী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেনকি না জানতে চাইলে তিনি কোন ধরনের সদুত্তর দিতে পারেনি।
এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি তা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাষ্টার নুর আহমদের লুঙ্গি পরিধানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
পেকুয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মুরাদ চৌধুরী জানান, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য নির্দিষ্ট ড্রেস কোড রয়েছে। ২১ ফেব্রেুয়ারী ভাষা দিবসসহ শ্রেণী কার্যক্রম চলাকালে অব্যশই শিক্ষকদের ড্রেস কোড মানতে হবে। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুর আহমদের বিষয়টি খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
পাঠকের মতামত: